ও৩ম্
নারীদের বেদাধ্যয়নের অধিকার: বৈদিক শাস্ত্রের প্রমাণ
সত্য এবং প্রাচীন বৈদিক
ধর্মের শাস্ত্রগুলোতে নারীদের বেদাধ্যয়ন করার অসংখ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। এই অসংখ্য
প্রমাণকে উপেক্ষা করে কিছু অজ্ঞ ব্যক্তি কিছু গুটিকয়েক প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের
ভিত্তিতে নারীদের "অনধিকারিণী" বলে প্রমাণ করার একটি নির্বুদ্ধিতাপূর্ণ
প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকে।
পৌরাণিক বিদ্যার
দেবী সরস্বতী ও নারীর অবস্থান
এরা বিদ্যার জন্য বিদ্যার
দেবী সরস্বতীর (যিনি একজন নারী দেহধারিণী) উপাসনা করে, অথচ তারাই নারীদের বেদপাঠ
থেকে বঞ্চিত করার কথা বলে। এটা একপ্রকার হাস্যকর।
প্রথমে নারীর কাছে বিদ্যার
জন্য প্রার্থনা করা, তারপর বিদ্যা লাভ করার পর নারীদের অধিকার নেই বলে 'ফতোয়া'
জারি করা একেবারে যুক্তিহীন।
নারীর অধিকার
সম্পর্কে প্রশ্ন
এই মূর্খরা কেন এটা ভাবে না
যে, যদি নারীদের বেদমন্ত্রে অধিকার না থাকত, তাহলে প্রাচীনকালে নারীরা কীভাবে বেদের
মন্ত্রদ্রষ্ট্রা এবং ঋষিকা হতে পারত?
- ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে নারীর ভূমিকা:
- যদি নারীরা বেদের অধিকারী না হতেন, তাহলে কীভাবে তারা যজ্ঞসহ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে এবং ষোড়শ সংস্কারে অংশগ্রহণ করতেন?
- বিবাহের অনুষ্ঠানে:
- বিবাহের মতো অনুষ্ঠানে নারীদের দিয়ে কেন বেদমন্ত্র উচ্চারণ করানো হতো?
- সান্ধ্য উপাসনা ও হোম-যজ্ঞে নারীর অধিকার:
- নিত্য সান্ধ্য উপাসনা ও হোম-যজ্ঞে নারীরা কীভাবে অংশগ্রহণ করতেন যদি তাদের কোনো অধিকার না থাকত?
যদি নারীরা
"অনধিকারিণী" ছিলেন, তাহলে অনসূয়া, অহল্যা, অরুন্ধতী, মদালসার মতো
অসংখ্য নারীরা কীভাবে বেদশাস্ত্রে পারদর্শী হতে পেরেছিল?
জ্ঞান ও ধর্মের
অধিকার
জ্ঞান, ধর্ম, এবং উপাসনার
স্বাভাবিক অধিকার থেকে জনগণকে বঞ্চিত করা কি অন্যায় এবং পক্ষপাতমূলক নয়?
- নারীর ভূমিকা:
- যখন নারী পুরুষের অর্ধাঙ্গিনী, তখন কীভাবে অর্ধেক অংশ অধিকারী আর অন্য অর্ধেক অংশ অধিকারহীন হতে পারে?
যাই হোক, এ প্রশ্নগুলোর
উত্তর তারা কখনো দিতে পারবে না। তবে শাস্ত্রের মাধ্যমেই তাদের এই মিথ্যা ধারণার
খণ্ডন করা সম্ভব, এবং সত্য এই যে—নারীরা বেদমন্ত্র উচ্চারণ, বেদ অধ্যয়ন, যজ্ঞাদি
সম্পাদন এবং আচার্য হওয়ার অধিকার রাখে ও সবসময়ই রেখেছে।
শাস্ত্রীয়
প্রমাণ
প্রমাণ:
- ঋগ্বেদ ১০। ৮৫ এর সমস্ত মন্ত্রের ঋষিকা হলেন ‘সূর্যা-সাবিত্রী’।
- ঋষি শব্দের অর্থ নিরুক্তে এভাবে করা হয়েছে— “ঋষির্দর্শনাৎ। স্তোমান্ দদর্শেতি (২.১১)। ঋষয়ো মন্ত্রদ্রষ্টার: (২.১১ দু. বৃ.)।” অর্থাৎ, যিনি মন্ত্রের দৃষ্টা এবং তাদের রহস্য উপলব্ধি করে প্রচার করেন, তিনিই ঋষি।
- ঋগ্বেদের ঋষিকাদের তালিকা ব্রহদ্দেবতার দ্বিতীয় অধ্যায়ে এভাবে দেওয়া হয়েছে— ঘোষা, গোধা, বিশ্ববারা, অপালা, উপনিষদ, নিশাদ, ব্রহ্মজয়া (জুহু), আগস্ট্যর বোন, আদিত্য, ইন্দ্রাণী ও ইন্দ্রের মা, সরমা, রোমশা, উর্বশী, লোপামুদ্রা এবং নদীগুলি, যমী, শশ্বতী, শ্রী, লক্ষা, সার্পরাজ্ঞী, বাক, শ্রদ্ধা, মেধা, দক্ষিণা, রাত্রি ও সূর্যা-সাবিত্রী—এই সমস্তই ব্রহ্মবাদিনী। ঋগ্বেদের ১০-১৩৪, ১০-৩৯, ৪০, ১০-৯১, ১০-৯৫, ১০-১০৭, ১০-১০৯, ১০-১৫৪, ১০-১৫৯, ১০-১৮৯, ৫-২৮, ৮-৯১ ইত্যাদি সূক্তের মন্ত্রদ্রষ্টা এই ঋষিকাগুলি। এমন অনেক প্রমাণ পাওয়া যায়, যা স্পষ্ট করে যে নারীরাও পুরুষদের মতো বেদ অধ্যয়ন ও যজ্ঞ করতে এবং করাতে পারতেন। তাঁরা যজ্ঞবিদ্যা ও ব্রহ্মবিদ্যায় দক্ষ ছিলেন।
সোমের দ্বারা বেদদান
"তৈত্তিরীয়
ব্রাহ্মণ"-এ সোমের মাধ্যমে 'সীতা-সাবিত্রী' ঋষিকাকে তিনটি বেদ দেওয়ার
বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। तं त्रयो वेदा अन्वसृज्यन्त। अथ ह सीता सावित्री। सोमं राजानं चकमे। तस्या उ ह त्रीन् वेदान् प्रददौ। - तैत्तिरीय ब्राह्मण २/३/१०/१, ३ । এই মন্ত্রে দেখানো হয়েছে, কিভাবে সোম সীতা-সাবিত্রীকে তিনটি বেদ
প্রদান করেন।
নারীর শ্রেণীবিভাগ
द्विविधा: स्त्रिया:। ब्रह्मवादिन्य: सद्योवध्वश्च। तत्र ब्रह्मवादिनीनामुपनयनम्, अग्रीन्धनं वेदाध्ययनं स्वगृहे च भिक्षाचर्येति। सद्योवधूनां तूपस्थिते विवाहे कथञ्चिदुपनयनमात्रं कृत्वा विवाह: कार्य:। —हारीत धर्म सूत्र
স্ত্রীর দুটি শ্রেণী:
ব্রহ্মবাদিনী এবং সদ্যবধূ।
- ব্রহ্মবাদিনী: ব্রহ্মবাদিনী বিধান, যজ্ঞোপবীত, অগ্নিহোত্র, বেদ অধ্যয়ন ও স্বগৃহে ভিক্ষা করার অনুমতি রয়েছে।
- সদ্যবধূ: সদ্যবধূদের জন্যও যজ্ঞোপবীত আবশ্যক। তাঁরা বিবাহের সময় উপস্থিত হলে সেটি সম্পন্ন করা হয়।
ম্যিত্রেয়ী: ব্রহ্মবাদিনী
"শতপথ
ব্রাহ্মণ"-এ যাজ্ঞবল্ক্য ঋষির স্ত্রী মৈত্রেয়ীকে ব্রহ্মবাদিনী বলা হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, “তয়োর্হ মৈত্রেয়ী ব্রহ্মবাদিনী বভূব।” (শত. ব্রা. ১৪/৭/৩/১)
অর্থাৎ মৈত্রেয়ী ব্রহ্মবাদিনী ছিলেন।
শঙ্করাচার্যের ব্যাখ্যা
ব্রহ্মবাদিনীর অর্থ শ্রী
শঙ্করাচার্য বৃহদারণ্যক উপনিষদের ভাষ্যে “ব্রহ্মবাদনশীল” হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।
স্ত্রীদের
উচ্চারণের বিধান
শতপথ ব্রাহ্মণ ১৪। ১। ৪।
১৬-এ, যজুর্বেদের ৩৭। ২০ মন্ত্র 'त्वष्टमन्तस्त्वा सपेम' এই মন্ত্রকে স্ত্রী দ্বারা উচ্চারণ করার বিধান
রয়েছে।
বেদের মন্ত্র
উচ্চারণের নির্দেশনা
- তৈত্তিরীয় সংহিতা: ১। ১। ১০ 'सुप्रजसस्त्वा वयं' প্রভৃতি মন্ত্রগুলিকে স্ত্রীর দ্বারা উচ্চারণ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
- আশ্বলায়ন গৃহ্যসূত্র: ১। ১। ৯-এ যজ্ঞে যাজক অনুপস্থিত থাকলে তার স্ত্রী, পুত্র বা কন্যাকে যজ্ঞ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- কাঠক গৃহ্যসূত্র: ৩। ১। ৩০ ও ২৭। ৩-এ নারীদের জন্য বেদ অধ্যয়ন, মন্ত্র উচ্চারণ ও বৈদিক কর্মকাণ্ড করার বিধান দেওয়া হয়েছে।
- লৌগাক্ষী গৃহ্যসূত্র: ২৫তম কণ্ডিকাতেও এ ধরনের প্রমাণ পাওয়া যায়।
সূর্য দর্শন
ও বিবাহের সময়
- সূর্য দর্শন: সূর্য দর্শনের সময় স্ত্রী নিজেই যজুর্বেদের ৩৬। ২৪ মন্ত্র 'तच्चक्षुर्देवहितं' উচ্চারণ করে।
- বিবাহের সময়: বিবাহের সময় 'সমঞ্জন' করার সময় বর-বধূ উভয়ে একসাথে 'অথৈনৌ সমঞ্জয়ত:.....' এই ঋগ্বেদ ১০। ৮৫। ৪৭ মন্ত্র পড়েন।
কুমারী গন্ধর্ব
গৃহীতার উপাখ্যান
ঐতরেয় ৫। ৫। ২৯-এ কুমারী
গন্ধর্ব গৃহীতার উপাখ্যান রয়েছে, যেখানে কন্যার যজ্ঞ ও বেদাধিকার স্পষ্ট করা
হয়েছে।
স্পষ্ট আদেশ
ও বিধান
- কাত্যায়ন শ্রৌতসূত্র: ১। ১। ৭, ৪। ১। ২২ এবং ২০। ৬। ১২ ইত্যাদিতে স্পষ্ট আদেশ রয়েছে যে নির্দিষ্ট বেদ-মন্ত্রগুলির উচ্চারণ স্ত্রী করবে।
- লাট্যায়ন শ্রৌতসূত্র: স্ত্রী দ্বারা সস্বরে সামবেদ মন্ত্রগুলির গায়ন করার বিধান রয়েছে।
- শাঙ্খায়ন শ্রৌতসূত্র: ১। ১২। ১৩ এবং আশ্বলায়ন শ্রোতসূত্র ১। ১১। ১-তে এ ধরনের বেদ-মন্ত্র উচ্চারণের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
কন্যার উচ্চারণের
অনুমতি
মন্ত্র ব্রাহ্মণ ১। ২। ৩-এ
কন্যার দ্বারা বেদ-মন্ত্রের উচ্চারণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
যজুর্বেদে নারীর গুণাবলী
- কুলায়িনী ঘৃতবতী পুরন্ধি: স্যোনে সীদ সদনে পৃথিব্যার। অভিত্বা রুদ্রা বসবো গৃণন্ত্বিমা। ব্রহ্ম পিপিহি সৌভাগ্যায়াশ্বিনাধ্বর্যূ সাদয়তামিহত্বা। —যজুর্বেদ ১৪। ২
- অর্থ: অর্থাৎ, হে স্ত্রী! তুমি কুলবতী, ঘৃত প্রভৃতি পুষ্টিকর পদার্থের যথাযথ ব্যবহারকারী, তেজস্বিনী, প্রজ্ঞাবান, সদকর্মকারী হয়ে সুখে অবস্থান করো। তুমি এমন গুণবতী এবং বিদুষী হও যে রুদ্র এবং বসুরাও তোমার প্রশংসা করবে। সৌভাগ্য প্রাপ্তির জন্য এই বেদমন্ত্রের অমৃত বারবার সঠিকভাবে পান করো। পণ্ডিতরা তোমাকে শিক্ষা দিয়ে এই উচ্চ অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করুক।
যজ্ঞে নারীর উপস্থিতি ও
তাদের অধিকার
এটি সর্বজনীন সত্য যে, যজ্ঞ
সম্পন্ন করতে হলে বেদমন্ত্রের প্রয়োজন হয় এবং যজ্ঞে স্বামী-স্ত্রীর উভয়ের উপস্থিতি
অপরিহার্য। শ্রী রামচন্দ্রজী সীতা জীর অনুপস্থিতিতে সোনালী প্রতিমা রেখে যজ্ঞ
করেছিলেন। ব্রহ্মাজীও সাবিত্রী-এর অনুপস্থিতিতে দ্বিতীয় স্ত্রীর বরণ করতে বাধ্য
হয়েছিলেন, কারণ যজ্ঞের পূর্ণতার জন্য স্ত্রীর উপস্থিতি আবশ্যক।
নারীর যজ্ঞে
ভূমিকা
যখন নারী যজ্ঞ করেন, তখন
তাদের বেদাধিকার না থাকার কথা কিভাবে বলা যায়? দেখুন—
১. যজ্ঞ ও স্ত্রীর
উপস্থিতি:
- "अ यज्ञो वा एष योऽपत्नीक:।" (তৈত্তিরীয় সংহিতা ২। ২। ২। ৬)
- অর্থাৎ, স্ত্রী ছাড়া যজ্ঞ হয় না।
- "अथो अर्धो वा एष आत्मन: यत् पत्नी।" (তৈত্তিরীয় সংহিতা ৩। ৩। ৩। ৫)
- অর্থাৎ, স্ত্রী স্বামীর অর্ধাঙ্গিনী, তাই তার ছাড়া যজ্ঞ অসম্পূর্ণ।
মহাভারত থেকে
কিছু প্রমাণ
এখন মহাভারত থেকে কিছু
প্রমাণ উপস্থাপন করা যাক—
১. শ্রুতাবতী
ব্রহ্মচারিণী:
- "भारद्वाजस्य दुहिता रूपेणाप्रतिमा भुवि। श्रुतावती नाम विभो कुमारी ब्रह्मचारिणी॥" (মহাভারত শাল্য পর্ব ৪৮। ২)
- অর্থাৎ, ভরদ্বাজের একটি কন্যা ছিল যার নাম শ্রুতাবতী, যিনি ব্রহ্মচারিণী ছিলেন। "কুমারী" ও "ব্রহ্মচারিণী" এই দুটি শব্দ ব্যবহার করে বোঝানো হয়েছে যে, তিনি অবিবাহিত এবং বেদ অধ্যয়নকারী।
২. সিদ্ধা
ব্রহ্মচারিণী:
- "अत्रैव ब्राह्मणी सिद्धा कौमार- ब्रह्मचारिणि। योगयुक्ता दिवं याता, तप: सिद्धा तपस्विनी॥(মহাভারত শাল্য পর্ব ৫৪। ৬)
- অর্থাৎ, যোগসিদ্ধি অর্জনকারী, কুমারী বয়সে যিনি বেদ অধ্যয়ন করেছিলেন, সেই সিদ্ধা নামের ব্রহ্মচারিণী মুক্তি লাভ করেছিলেন।
৩. সুলভা
ব্রহ্মবাদিনী:
মহাভারতের শান্তি পর্ব অধ্যায় ৩২০-এ ‘সুলভা’ নামক ব্রহ্মবাদিনী সন্ন্যাসিনীর
বর্ণনা রয়েছে, যিনি রাজা জনক এর সাথে শাস্ত্রার্থ করেছেন। একই অধ্যায়ের
শ্লোকগুলোতে সুলভা তাঁর পরিচয় দিয়ে বলেন—
- "प्रधानो नाम राजर्षिव्र्यक्तं ते श्रोत्रमागत:। कुले तस्य समुत्पन्नां सुलभां नाम विद्धि माम्" (মহাভারত শান্তি পর্ব ৩২০। ১৮১। ১৮৩)
- অর্থাৎ, আমি প্রখ্যাত ক্ষত্রিয় বংশে জন্মগ্রহণকারী সুলভা। আমার উপযুক্ত স্বামী না পাওয়ায় আমি গুরুদের কাছ থেকে শাস্ত্র শিক্ষা গ্রহণ করে সন্ন্যাস গ্রহণ করেছি।
বাল্মীকি রামায়ণ থেকে
প্রমাণ
এখন দেখে নেওয়া যাক বাল্মীকি
রামায়ণ থেকে কিছু প্রমাণ—
১. সীতা জীর যজ্ঞ
- “देही शोकसन्तप्ता हुताशनमुपागमत्।” (वाल्मीकि सुन्दर ৫৩। ২৬)
- অর্থাৎ, তখন শোকসন্তপ্ত সীতা জী যজ্ঞ করেছিলেন।
২. কৈকেয়ী
এবং সুমন্ত্রের আলোচনা
- “तदा सुमन्त्रं मन्त्रज्ञा कैकेयी प्रत्युवाच ह।” (वाल्मीकि रामायण अयो० १४। ६१)
- অর্থাৎ, বেদমন্ত্রের জ্ঞাতা কৈকেয়ী সুমন্ত্রকে বললেন।
- “सा क्षौमवसना हृष्ट नित्यं व्रतपरायणा। अग्निं जुहोति स्म तदा मन्त्रवत् कृतमंगला॥” (वाल्मीकि रामायण २। २०। १५)
- অর্থাৎ, রেশমি কাপড় পরিহিতা, ব্রতপরায়ণা, প্রসন্ন মুখী কৌশল্যা মন্ত্র অনুযায়ী অগ্নিহোত্র করছেন।
৩. তারা এবং
যজ্ঞ
- “तत: स्वस्त्ययनं कृत्वा मन्त्रविद् विजयैषिणी। अन्त:पुरं सहस्त्रीभि: प्रविष्टि शोकमोहिता॥” (वाल्मीकि रामायण ४। १६। १२)
- অর্থাৎ, মন্ত্রের জ্ঞাতা তারা, তার স্বামী বালীর বিজয়ের জন্য স্বস্তিবাচন মন্ত্র পাঠ করে অন্তঃপুরে প্রবেশ করলেন।
অন্যান্য শাস্ত্রীয় প্রমাণ
এছাড়া, বসিষ্ঠ স্মৃতি এবং
ব্যাকরণ শাস্ত্রেও নারীদের বেদমন্ত্রের উচ্চারণ ও অধ্যয়নের সমর্থন রয়েছে।
১. বসিষ্ঠ
স্মৃতি
- নারীদের অধিকার
- বসিষ্ঠ স্মৃতিতে নারীদের বেদমন্ত্রের উচ্চারণ ও অধ্যয়নের সমর্থন রয়েছে।
২. ব্যাকরণ শাস্ত্র
‘उपाध्यायी उपाध्याया’
- “इडश्च” ৩। ৩। ২১ মহাভাষ্যে লেখা আছে—
- “उपेत्याधीयतेऽस्या उपाध्यायी उपाध्याया।”
- অর্থাৎ, যাদের কাছে এসে কন্যাগণ বেদ এবং বেদাঙ্গের অধ্যয়ন করেন, তারা উপাধ্যায়ী বা উপাধ্যায়া হিসেবে পরিচিত হন।
- “आचार्यादणत्वं।” —অষ্টাধ্যায়ী ৪। ১। ৪৯
- এই সূত্রের উপর সিদ্ধান্ত কৌমুদীতে বলা হয়েছে—
- “आचार्यस्य स्त्री आचार्यानी पुंयोग इत्येवं आचार्या स्वयं व्याख्यात्री।”
- অর্থাৎ, যে নারী বেদের প্রভাষক, তাকে আচার্যা বলা হয়।
উপসংহার
এভাবে দেখা যায়, নারীদের বেদ অধ্যয়ন করার অধিকার শাস্ত্রসম্মত এবং এটি সুস্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত।
